Monday, April 29, 2024

সামাজীক বিজ্ঞান ইউনিট ২।। ১৮তম NTRCA স্কুল পর্যায় লিখিত প্রস্তুতি।

 

ভাষা আন্দোলন বলতে কি বুঝ? ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের গুরুত্ব আলোচনা কর।

ভূমিকাভাষা আন্দোলনবাঙালির মুক্তির সংগ্রামী ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের আপামর জনসাধারণ তাদের রক্তের বিনিময়ে ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আমাদের ভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছে। তাই আজ আমরা আমাদের ভাষা বাংলায় কথা বলছি। আন্দোলনের মধ্যেই আমাদের জাতিসত্তা নিহিত রয়েছে।

ভাষা আন্দোলন: ভাষা আন্দোলন বাংলা ভাষার রাষ্ট্রীয় মর্যাদার দাবিতে সংগঠিত গণআন্দোলন। ১৯৪৭ সালে ভারতীয় উপমহাদেশ বিভক্ত হওয়ার পর থেকে বিভিন্ন ঘটনার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি আন্দোলন চূড়ান্ত রূপ নেয়।পুলিশের গুলিতে পূর্ব পাকিস্তানীরা রাজপথে বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়ে প্রতিষ্ঠা করে নিজের ভাষায় কথা বলার অধিকার। আন্দোলন-সংগ্রাম জীবনের বিনিময়ে ভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠা করা একমাত্র জাতি বাঙালি।

ভাষা আন্দোলনের গুরুত্ব তাৎপর্য: ১৯৪৮ ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন তৎকালীন সময়ের রাজনীতি, অর্থনীতি সংস্কৃতিতে সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলে। এবং বাঙালি জাতীয়তাবাদের বিকাশ ঘটানোর মধ্য দিয়ে চূড়ান্ত রূপ দেয় আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের। নিম্নে ভাষা আন্দোলনের গুরুত্ব তাৎপর্য ব্যাখ্যা করা হলো:

. বাঙালি জাতীয়তাবাদের বিকাশ: একটি জাতির জাতীয়তাবাদের বিকাশ ঘটানোর প্রধান মাধ্যম হচ্ছে ভাষা। পূর্ব পাকিস্তানের সে ভাষার ওপর আঘাত হানে পশ্চিম পাকিস্তানীরা। শতকরা ৫৪ ভাগ লোকের ভাষা বাংলা কে উপেক্ষা করে মাত্র ভাগ লোকের ভাষা উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা করার অপচেষ্টা করে তারা। ভাষার ওপর এমন আঘাত পূর্ব বাংলার মানুষকে সংগ্রামী করে তুলে, উন্মেষ ঘটায় তাদের জাতীয়তাবাদের। এই বাঙালি জাতীয়তাবাদী চেতনাই ষাটের দশকের স্বৈরশাসন-বিরোধী স্বায়ত্তশাসনের পক্ষে আন্দোলনের প্রেরণা যোগায়।

. অসাম্প্রদায়িক চেতনার উন্মেষ: ভাষা আন্দোলনের ফলে অসাম্প্রদায়িক রাজনীতির বিকাশ ঘটে। ধর্মকে পুঁজি করে পশ্চিমাদের ষড়যন্ত্রের নীলনকশা বাঙালিরা আঁচ করতে পারে। ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত বাংলাকে উর্দু ইংরেজির পাশাপাশি গণপরিষদের ভাষা হিসেবে মর্যাদা দেওয়ার আহ্বান জানালে তাকে প্রত্যাখ্যান করা হয়, এতে পূর্ববাংলা জনগণ প্রতিরোধ গড়ে তোলে। প্রতিরোধ সৃষ্টিকারী জনগোষ্ঠীকে পাকিস্তানিরা ভারতের দালাল, অমুসলিম কাফের ঘোষণা করলেও তাতে প্রতিরোধ দমে যায়নি। পশ্চিমাদের কড়া জবাব দিতে পূর্ব বাংলার সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল আওয়ামী মুসলিম লীগ তাদের নাম থেকে মুসলিম শব্দটি কেটে দেয়।

. সংগ্রামী মনোভাব সৃষ্টি: মূলত ভাষণ ভাষা আন্দোলনের সময় থেকেই বাঙালিরা সংগ্রামী হয়ে ওঠেন। তারা তাদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন হয়ে উঠেন। পরবর্তীতে সংগ্রামী মনোভাব তাদেরকে স্বাধীনতা অর্জনে প্রেরণা যোগায়।

. কুসংস্কার গোঁড়ামিতে আঘাত: তৎকালীন মুসলিম সমাজ রক্ষণশীল হলেও মায়ের ভাষার মর্যাদা বাঁচাতে মেয়েরা রাস্তায় নেমে পরেন। ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারিতে ১৪৪ ধারা ভঙ্গের শোভাযাত্রায় প্রথম সারিতেই মেয়েরা ছিলেন। ১৯৪৮ সালে যশোর ভাষা সংগ্রাম কমিটির যুগ্ম সম্পাদক ছিলেন হামিদা রহমান। তাছাড়াও অনেক মেয়েরা গোপনে চাঁদা দিয়ে, দেওয়ালে পোস্টার লাগিয়ে নানাবিধ ভূমিকায় ভাষা সংগ্রামের গতি ত্বরান্বিত করেছিলেন।

. রাজনীতিতে নতুন মেরুকরণ: ভারত বিভাগের সময় থেকে চারটি পৃথক ভাবাদর্শ ভিত্তিক রাজনৈতিক ধারা লক্ষনীয় ছিল। এদের মধ্যে প্রথম ছিল মুসলিম জাতীয়তাবাদের ভাবাদর্শ ধারণকারী মুসলিম লীগ। যার ছিল চারটি উপদল।এদের একটি উপদল মাত্র উর্দুর পক্ষে ছিল। বাকি তিনটি উপদল তিনটি পৃথক ভাবাদর্শ ধারণকারী রাজনৈতিক দলের আংশিক নেতারা মিলে ভাষার অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে সংগ্রাম গড়ে তোলে। এতে করে পূর্ব বাংলায় নতুন রাজনৈতিক ধারার প্রচলন হয়। তাই বলা যায় বাংলাদেশের রাজনৈতিক বিবর্তনের ভাষা আন্দোলন ছিল প্রথম পদক্ষেপ।

 

. বাংলাকে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা দান: ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি একটি সফল আন্দোলনের মাধ্যমে পূর্ববাংলার সর্বস্তরের জনসাধারণ বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন। পাকিস্তান সরকার ১৯৫৬ সালের সংবিধানে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষার স্বীকৃতি দেয়।

. যুক্তফ্রন্টের বিজয় লাভ: ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন বাঙ্গালীদের কে দাবি আদায়ের লক্ষ্যে একত্রিত হতে উদ্বুদ্ধ করেন। প্রাদেশিক নির্বাচন নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের টালবাহানার পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৫৩ সালের ১৪ নভেম্বর গঠিত যুক্তফ্রন্টের নেতৃত্বে ১৯৫৪ সালের মার্চে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ভাষা আন্দোলনের একত্রিত শক্তিকে কাজে লাগিয়ে বাঙালিরা জয়লাভ করেন।

. বাংলা ভাষার চর্চা বিকাশ: বাংলা সাহিত্যকে সংস্কৃত হিন্দু প্রভাবিত বলার প্রয়াসের বিরুদ্ধে ভাষা আন্দোলন ছিল একটি জোরালো প্রতিবাদ। ভাষার অধিকার ফিরে পাওয়ায় এদেশের সাহিত্যিকগণ নতুন অনুপ্রেরণা খুঁজে পান লেখার জন্য। হাসান হাফিজুর রহমান সম্পাদিত একুশে ফেব্রুয়ারি এবং আবদুল গাফ্ফার চৌধুরীর কথায় আলতাফ মাহমুদের সুরে রচিত বাঙালির প্রাণের গান আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি এই পালাবদলের অন্যতম স্বাক্ষর বাহি।

. শহীদ মিনার তৈরি শহীদ দিবস পালন:  ১৯৫২ সালেই বাঙালি জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে দাঁড়ায় শহীদ মিনার। ভাষা আন্দোলনে যারা শহীদ হন তাদের স্মরণে বাংলার শহর, বন্দর, নগরে স্থাপিত হয় অসংখ্য শহীদমিনার। UNESCO ১৯৯৯ সালে ভাষা আন্দোলনে জীবন দানকারী শহীদদের স্বার্থে একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করে যা একমাত্র ভাষা আন্দোলনেরই প্রতিফলন। বাঙালি জাতীয়তাবাদ, সাহিত্য সংস্কৃতি আন্দোলনের কেন্দ্রবিন্দু হল শহীদ মিনার। একারণেই মুক্তিযুদ্ধের প্রথম প্রহরেই পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী তাদের দোসররা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার সহ দেশের প্রায় সকল শহীদ মিনার ধ্বংস করে।

১০. স্বায়ত্তশাসন আন্দোলন মুক্তিযুদ্ধের প্রেরণা: ভাষা আন্দোলন ভাষার দাবিকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠলেও ক্রমে এর সাথে বাঙালির অধিকার প্রতিষ্ঠার প্রশ্ন জড়িয়ে পরে। আন্দোলনের উদ্দীপনা বিজয় উল্লাস কে কাজে লাগিয়েই পরবর্তীতে বাঙালি জাতি বিভিন্ন রাজনৈতিক আন্দোলনে বিজয় লাভ এবং সর্বশেষ তাদের কাঙ্ক্ষিত মুক্তির স্বাদ পায়।

উপসংহার: উপরোক্ত আলোচনা থেকে একথা পরিষ্কার যে, ১৯৫২ সাল থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত প্রতিটি আন্দোলনে প্রেরণা যুগিয়েছে ভাষা আন্দোলন। আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতির হৃদয়ে বোপিত হয় সংগ্রামী চেতনার বীজ। বিকাশ ঘটে বাঙালি জাতীয়তাবাদের, পৃথিবীর মানচিত্রে জন্ম নেয় স্বাধীন সার্বভৌম একটি দেশ, বাংলাদেশ।

 

১৯৫৪ সালের নির্বাচনে মুসলিম লীগের পরাজয় যুক্তফ্রন্টের বিজয়ের কারণ:

ভূমিকা :

১৯৫৪ সালের প্রাদেশিক নির্বাচন এবং নির্বাচনে যুক্তফ্রন্টের বিজয় মুসলিমলীগের পরাজয় ছিল পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর রাজনৈতিক একাধিপত্যের বিরুদ্ধে পূর্ববাংলার জনসাধারণের অধিকার আদায়ের এক বলিষ্ঠ রাজনৈতিক প্রতিবাদ ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতীয়তাবাদের যে স্ফুরণ ঘটে ১৯৫৪ সালের, প্রাদেশিক নির্বাচনে যুক্তফ্রন্টের নিরঙ্কুশ বিজয়ের মধ্য দিয়ে তার বহিঃপ্রকাশ ঘটে প্রচলিত সংবিধান অনুযায়ী পূর্বপাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচন ১৯৫১ সালে অনুষ্ঠানের কথা থাকলেও তা যথাসময়ে না হয়ে ১৯৫৪ সালে অনুষ্ঠিত হয় নির্বাচন ছিল পূর্ববাংলার প্রথম প্রাদেশিক নির্বাচন। নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট বিজয় অর্জন করে এবং ক্ষমতাসীন মুসলিম লীগের
ভরাডুবি ঘটে ১৯৫৪ সালে পূর্ব বাংলার প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনে মুসলিম লীগকে ক্ষমতাচূত করার লক্ষ্যে যুক্তফ্রন্ট গঠিত হয়

যুক্ত-ফ্রন্ট-কী:

১৯৪৭ সালে পাকিস্তান রাষ্ট্র গঠিত হওয়ার পর থেকেই পাকিস্তান সরকারের অগণতান্ত্রিক আচরণ, দমননীতি , পূর্ব পশ্চিম পাকিস্তান এর ভিতর বৈষম্য, বাংলা ভাষার অবমাননা ইত্যাদি কারণে মুসলীম লীগের প্রতি পূর্ব বাংলার সাধারণ মানুষ নেতৃত্ববৃন্দ বীতশ্রদ্ধ হয়ে উঠে। মুসলিম লীগের নেতারা পূর্ব বাংলার টাকা সেসময়ে পশ্চিম পাকিস্তানে পাচার করতো। মুসলীম লীগ পূর্ব বাংলার পাট বেচা টাকা দিয়ে পশ্চিম পাকিস্তান উন্নয়ন করতো। কিন্তু তা পূর্ব বাংলার কোনো উন্নয়ন করেনি

আবার মুসলিম লীগের নেতারা জনবান্ধব ছিলেন না। তারা নিজের ইচ্ছায় দেশ চালাতেন। যেমনঃ ১৯৫২ সালে বাংলা সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মানুষের মুখের ভাষা মাতৃভাষা হওয়া সত্ত্বেও বাংলাকে তারা রাষ্ট্রভাষা করতে চায়নি। পরে নিয়ে আন্দোলন হলে তারা বাংলা হরফকে নিশ্চিহ্ন করে আরবি হরফে বাংলা লেখার প্রচলন করতে চেয়েছিলো। পরে অবশ্য আন্দোলনের মুখে তা আর করতে পারেনি

অবস্থায় ১৯৫৪ সালের প্রাদেশিক পরিষদকে সামনে রেখে ক্ষমতাসীন অগণতান্ত্রিক দুর্নীতিপরায়ন মুসলীম লীগকে ক্ষমতাচূত করার লক্ষ্যে আওয়ামী লীগ, কৃষক শ্রমিক লীগ, নেজামী ইসলাম এবং গণতন্ত্রী দল এইটি দল নিয়ে যুক্তফ্রন্ট গঠিত হয়

অর্থাৎ মুসলিম লীগকে নির্বাচনে হারানোর জন্য যুক্তফ্রন্ট গঠিত হয়। উল্লেখ্য যে যুক্তফ্রন্ট সেই প্রাদেশিক নির্বাচনে জয় লাভ করে সরকার গঠন করে


১৯৫৪ সালের নির্বাচনে যুক্তফ্রন্টের বিজয় এবং মুসলিম লীগের পরাজয়ের কারণ :

১৯৫৪ সালের নির্বাচনে যুক্ত ফ্রন্টের বিজয় এবং মুসলিম লীগের পরাজয়ের কারণগুলো নিম্নে উল্লেখ করা হলো :
. রাষ্ট্রভাষার দাবিকে নাকচ করা: মুসলিম লীগ পূর্ববাংলার জনগণের স্বার্থের প্রতি চরম উপেক্ষা প্রদর্শন করে দল বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার বিরোধিতা করলে এর প্রতি পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের ক্ষোভ বৃদ্ধি পায় এবং ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটে ১৯৫৪ সালের নির্বাচনের মধ্য দিয়ে। ফলে নির্বাচনে যুক্ত বিজয় অর্জন করে এবং মুসলিম লীগের পরাজয় ঘটে।
. স্বায়ত্তশাসনের দাবি উপেক্ষা করা :পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের দীর্ঘ আকাঙ্ক্ষিত আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসনের দাবির প্রতি সাড়া না দেওয়ায় ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট বিজয় অর্জন করে এবং মুসলিম লীগ পরাজয় বরণ করতে বাধ্য হয়।


. বিশিষ্ট রাজনীতিবিদদের মুসলিম লীগ ত্যাগ :১৯৪০ লাহোর প্রস্তাবে যে স্বায়ত্তশাসনের কথা উল্লেখ করা হয়, তার প্রতি মুসলিম লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা সাড়া না দেওয়ায় আবুল হাশেম, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, মওলানা ভাসানী প্রমুখ নেতৃবৃন্দ মুসলিম লীগ ত্যাগ করতে বাধ্য হন। বিশিষ্ট রাজনীতিবিদদের মুসলিম লীগ ত্যাগ যুক্তফ্রন্টের বিজয় এবং মুসলিলীগের পরাজয়ের অন্যতম একটি কারণ ছিল


. পূর্ব পাকিস্তানের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অবহেলা :মুসলিম লীগ পরিচালিত কেন্দ্রীয় সরকার বৈষম্যমূলক আচরণের দ্বারা পূর্ব পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যে আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে বিরাট ব্যবধান সৃষ্টি করে। ব্যবধানই পূর্ব পাকিস্তানের জনগণকে পশ্চিমা শাসনের বিরুদ্ধে বিক্ষুব্ধ করে তোলে এবং এর চূড়ান্ত পরিণতিতে নির্বাচনে যুক্তফ্রন্টেরবিজয় নিশ্চিত হয় এবং মুসলিম লীগের পরাজয় ঘটে


. সরকারের দমনমূলক নীতি : মুসলিম লীগ সরকার পূর্ববাংলার বিভিন্ন গণআন্দোলনকে দেশদ্রোহিতা বলে
অভিহিত করে এবং এসব আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত নেতা কর্মীদের উপর দমনমূলক নীতি প্রয়োগ করে। এতে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের মনে মুসলিম লীগ বিরোধী মনোভাব জাগ্রত হয়। সুতরাং মুসলিম লীগ সরকারের এই দমনমূলক নীতি তাদের পরাজয়ে সহায়তা করে এবং যুক্তফ্রন্টের বিজয়কে নিশ্চিত করে।

. পূর্ব পাকিস্তানের অর্থনৈতিক অবনতি : প্রাদেশিক নির্বাচনের পূর্ব থেকেই পূর্ব পাকিস্তানের অর্থনৈতিক অবনতি ঘটতে থাকে অবনতি ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে যুক্তফ্রন্টের বিজয় অর্জনে এবং মুসলিম লীগের পরাজয়ের অন্যতম কারণ হিসেবে কাজ করে
. মুসলিম লীগের জনবিচ্ছিন্নতা : মুসলিম লীগ জনগণের সাথে নিবিড় সম্পর্ক গড়ে তোলার পরিবর্তে কায়েমি স্বার্থবাদীদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ গড়ে তোলে তাই দল জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। মুসলিম লীগের এই জনবিচ্ছন্নতা যুক্তফ্রন্টের বিজয় অর্জনে এবং মুসলিম লীগের পরাজয়ের অন্যতম একটি কারন ছিল
. সঠিক সময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠানে ব্যর্থতা : মুসলিম লীগ সরকার ১৯৫১ সালে নির্ধারিত সময় অনুযায়ী নির্বাচন অনুষ্ঠানের আয়োজন না করে প্রাদেশিক আইনসভার মেয়াদ তিন বছর বাড়িয়ে দেওয়ায় পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের মনে দলের বিরুদ্ধে অসন্তোষ বৃদ্ধি পায়। পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের মনে বিদ্যমান অসন্তোষই যুক্তফ্রন্টের বিজয় এবং মুসলিম লীগের পরাজয়ের অন্যতম একটি কারন ছিল
. সংবিধান প্রণয়নে ব্যর্থতা : মুসলিম লীগের নেতৃত্বাধীন গণপরিষদ পাকিস্তানের সংবিধান রচনায় ব্যর্থতার পরিচয় দিলে দলের প্রতি পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের আত্মবিশ্বাস লোপ পায়। সুতরাং মুসলিম লীগ সরকারের সংবিধান রচনায় ব্যর্থতাও যুক্তফ্রন্টের বিজয় লাভ এবং মুসলিম লীগের পরপজয়ের অন্যতম একটি কারন ছিল
১০. ২১ দফা ভিত্তিক নির্বাচনি ইশতেহার প্রকাশ : ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট ২১ দফার ভিত্তিতে নিজেদেরকে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের স্বার্থের বাহক হিসেবে উপস্থাপন করলেও মুসলিম লীগ এক্ষেত্রে ছিল সম্পূর্ণ ব্যর্থ ।সুতরাং মুসলিমলীগ কর্তৃক বাস্তবসম্মত নির্বাচনী ইসতেহার প্রকাশ করতে না পারাটাও যুক্তফ্রন্টের বিজয় এবং মুসলিম
লীগের পরাজয়ের অন্যতম একটি কারণ ছিল
১১. মুসলিম লীগ নেতাদের ব্যর্থতা : তৎকালীন মুসলিম লীগের প্রাদেশিক নেতৃবৃন্দের জনবিচ্ছিন্নতা ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে মুসলিম লীগের পতনকে ত্বরান্বিত করে অন্যদিকে যুক্তফ্রন্টের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গের জনপ্রিয়তা যুক্তফ্রন্টদলকে বিজয়ের আসনে আসীন করে

১২. মুসলিম লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল :
কেন্দ্রীয় সরকার পরিচালনার ক্ষেত্রে গভর্নর জেনারেলের স্বৈরতান্ত্রিক মনোভাব মুসলিম লীগের অভ্যন্তরে কোন্দলের সৃষ্টি করে। ১৯৫৩ সালে গভর্নর জেনারেল কর্তৃক প্রধানমন্ত্রী
নাজিমউদ্দীনকে অন্যায়ভাবে বরখাস্ত করায় কোন্দল ব্যাপক আকার ধারণ করে। কোন্দলে ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে যুক্তফ্রন্টের বিজয় এবং মুসলিম লীগের পরাজয়কে ত্বরান্বিত করে।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, ১৯৫৪ সালের প্রাদেশিক নির্বাচনে পূর্ববাংলার জনসাধারণের স্বাধিকার প্রতিষ্ঠার মূর্ত প্রতীক হিসেবে যুক্তফ্রন্টের আবির্ভাব ঘটেছিল। বিপুল জনসমর্থনে নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট নিরঙ্কুশ বিজয় লাভ
করে মুসলিম লীগের একাধিপত্যকে খর্ব করে যুক্তফ্রন্টের বিজয়ের ফলে বাঙালি জাতির অধিকার প্রতিষ্ঠার অনুপ্রেরণা এবং সেই লক্ষ্যে তাদের ঐক্যবোধ উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাওয়ায় পরবর্তীতে মুক্তি স্বাধীনতা আন্দোলনের ক্ষেত্র সুপ্রশস্ত হয়

১৯৬৬ সালের দফা আন্দোলনের গুরুত্ব | বাঙালির মুক্তির সনদ

 

Qq `dv Kg©m~wP cwðgv kvmK †Mvôx KZ…©K c~e© evsjv‡K †kvl‡Yi wei“‡× Qq `dv Kg©m~wP wQj Zxeª cÖwZev` Avi evOvwji AwaKvi Av`v‡qi mb` ev gyw³mb`| Qq `dv Kg©m~wP wQj wbgœiƒc : 1g `dv : jv‡nvi cÖ¯Ív‡ei wfwˇZ cvwK¯Ív‡bi Rb¨ mwZ¨Kvi A‡_© GKwU hy³ivóªxq kvmbZš¿ cÖYqb Ki‡Z n‡e| miKvi n‡e msm`xq c×wZi| me©Rbxb †fvUvwaKv‡ii wfwˇZ mKj cÖvß eq‡¯‹i †fv‡U RvZxq I cÖv‡`wkK AvBbmfv¸‡jv MwVZ n‡e|

2q `dv : hy³ivóªxq miKv‡ii nv‡Z _vK‡e †`ki¶v I ciivóª welq| Aewkó mKj welq cÖ‡`‡ki nv‡Z _vK‡e|

 3q `dv : †`‡ki `yB A‡ji Rb¨ `ywU c„_K A_P mnR wewbgq‡hvM¨ gy`ªv Pvjy _vK‡e A_ev †`‡ki `yB A‡ji Rb¨ GKB gy`ªv _vK‡e| Z‡e msweav‡b Ggb e¨e¯’v ivL‡Z n‡e hv‡Z GK A‡ji gy`ªv I g~jab Ab¨ A‡j cvPvi n‡Z bv cv‡i|

 4_© `dv : mKj cÖKvi U¨v·, LvRbv I Ki avh© Ges Av`v‡qi ¶gZv cÖv‡`wkK miKv‡ii nv‡Z _vK‡e Z‡e †Kw›`ªq miKv‡ii e¨q wbe©v‡ni Rb¨ Av`vq K…Z A‡_©i GKwU Ask †Kw›`ªq miKvi cv‡e|

 5g `dv : ˆe‡`wkK evwYwR¨ I ˆe‡`wkK gy`ªvi Dci cÖv‡`wkK miKv‡ii ¶gZv _vK‡e| mKj cÖKvi ˆe‡`wkK Pzw³ I mn‡hvwMZvi e¨vcv‡i cÖv‡`wkK miKvi `vwqZ¡ cvjb Ki‡e| Z‡e hy³ivóªxq miKv‡ii ˆe‡`wkK gy`ªvi Pvwn`v hyw³hy³ nv‡i Dfq miKvi KZ…©K †gUv‡bv n‡e|

6ô `dv : AvÂwjK wbivcËvi Rb¨ AvÂwjK miKvi¸‡jv ¯^xq KZ…©Z¡vaxb Avav mvgwiK evwnbx (c¨viv wgwjwkqv) MVb I cwiPvjbv Ki‡Z cvi‡e|

Qq `dv Kg©m~wPi g~j Av‡e`b wQj c~e© cvwK¯Ívb ïay GKwU cÖ‡`k bq eis GKwU ¯^Zš¿ ¯^vqËkvwmZ AÂj| mKj cÖKvi †kvlY I eÂbvi Aemvb NUv‡bvB wQj Gi j¶¨|

দফা আন্দোলনের গুরুত্ব

ব্রিটিশ শাসন থেকে মুক্ত হয়ে পাকিস্তান সৃষ্টি হলেও পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন হয় নি। পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী পূর্ব পাকিস্তানকে একটি উপনিবেশে পরিণত করে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণকে সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক প্রশাসনিক ক্ষেত্রে ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়। পশ্চিম পাকিস্তান শাসকগোষ্ঠীর ঔপনিবেশিক শাসন শোষণ থেকে পূর্ব পাস্তিানকে মুক্ত করার লক্ষ্যে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু মুজিবুর রহমান ১৯৬৬ সালের ফেব্রুয়ারি ছয় দফা দাবি পেশ করেন। যা বাঙালির ম্যাগনাকার্টা নামে পরিচিত। নিচে -দফা আন্দোলনের গুরুত্ব তুলে ধরা হলো-

. মুক্তি সনদ: জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের -দফা কর্মসূচি বাঙালির ম্যাগনাকার্টা বা মুক্তি সনদ নামে পরিচিত। এই -দফার মাধ্যমেই বাঙালি ঐক্যবদ্ধভাবে পশ্চিম পাকিস্তানের শোষণ নিপীড়নের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়।

 

. জাতীয়তাবাদী চেতনার উন্মেষ

বাঙালির দাবি দফা, বাঁচার দাবি দফা, দফার ভেতরেই পূর্ব পাকিস্তানের স্বায়ত্তশাসন নিহিত ইত্যাদি শ্লোগান বুদ্ধিজীবী থেকে শুরু করে সাধারণ কৃষক শ্রমিক সকলের মুগ্ধে মুখে ধ্বনিত হতে থাকে। ফলে সকলের মধ্যে জাতিকে বাঁচানোর তীব্র আকাঙ্ক্ষা লক্ষ করা যায়।

. স্বায়ত্তশাসনের দাবি

লাহোর প্রস্তাবের উপর আস্থা রেখেই পাকিস্তান রাষ্ট্রের জন্ম। কিন্তু পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার শুরু থেকেই স্বায়ত্তশাসনের বিষয়টিকে উৎখাত করে সংসদীয় গণতন্ত্রের পরিবর্তে সামরিক শাসন জারি করা হয়েছে। এর ফলে বাঙালিকে সর্বদিক থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। -দফার মধ্য দিয়ে বাঙালি স্বায়ত্তশাসনের দাবি জানিয়েছে এবং স্বাবলম্বী হতে চেয়েছে।

. বৈষম্য দূরীকরণ

পাকিস্তান সরকার পূর্ব পাকিস্তানের প্রতি যে বিমাতাসুলভ আচরণ করেছে তা -দফা কর্মসূচি ঘোষণার মধ্য দিয়ে প্রকাশ পেয়েছে। অর্থনীতি, প্রশাসনিক, সামরিক ইত্যাদি সকল ক্ষেত্রে পূর্ব পাকিস্তানকে বঞ্চিত করা হয়েছে। মুদ্রা, শুল্ক আদায়, আধা সামরিক বাহিনী গঠন ইত্যাদি পূর্ব পাকিস্তানকে সুসংগঠিত শক্তিশালী করার জন্য প্রয়োজন ছিল।

. আন্দোলনের গতি লাভ

পাক ভারত যুদ্ধ পরবর্তী তাসখন্দ চুক্তি পশ্চিম পাকিস্তানিদের চরমভাবে হতাশ করেছিল এবং আইয়ুববিরোধী দলগুলো সোচ্চার হয়েছিল। সুযোগের সর্বোচ্চ সদ্ব্যবহার করেছিলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি বাঙালির মনের কথা বুঝেছিলেন। -দফার দাবিগুলো বাঙালির কাছে ছিল অত্যন্ত যৌক্তিক। তাই -দফা আন্দোলন সাফল্য লাভ করেছিল। আর আইয়ুব খান তার গভর্নর মোনেম খান মিলে বাঙালিদের যত দমন পীড়ন করেছেন আন্দোলনের গতি আরো তত বৃদ্ধি পেয়েছে।

. আওয়ামী লীগের প্রতি আস্থা

আওয়ামী লীগ সভাপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের -দফা কর্মসূচির সঙ্গে অনেক রক্ষণশীল বয়োজ্যেষ্ঠ নেতা একমত হয়নি। কিন্তু তরুণ সমাজ এর দ্বারা উজ্জীবিত হয়েছিল। অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যেও ভাঙন দেখা দেয়। তথাপি প্রতিটি দলের একাংশ আওয়ামী লীগের -দফার প্রতি সমর্থন জানায়। আওয়ামী লীগ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের প্রতি আস্থাই অন্যান্য দলগুলোকে আওয়ামী লীগের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলনের প্রেরণা যুগিয়েছিল।

. আইয়ুব খানের বিদায় বার্তা

১৯৬৬ সালের আন্দোলনে এতদিনের পুঞ্জীভূত ক্ষোভ প্রকাশ পেয়েছে। -দফা আন্দোলন দমনের জন্য আইয়ুব খান ১৯৬৮ সালে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা নামে এক মিথ্যা মামলায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ আরো অনেককে কারাদণ্ড দেন। এতে অবস্থার আরো অবনতি হয়। আন্দোলন আরো জোরদার হয়, কিন্তু আন্দোলনকে দমন করার আর কোনো মন্ত্র তার জানা ছিল না।

. সংস্কৃতির প্রতি ভালোবাসা

আইয়ুব খান সরকার ১৯৬৭ সালে রেডিও টেলিভিশনে রবীন্দ্রনাথ সঙ্গীত প্রচার বন্ধ ঘোষণা করে। বুলবুল একাডেমী, ছায়ানট ইত্যাদি সংগঠন প্রগতিশীল সমাজ এর প্রতিবাদ করে। বাংলা ভাষা বানান সংস্কারের চেষ্টা করলে তারও প্রতিবাদ জানানো হয়। ফলে বাঙালির মনে নিজের ভাষা সংস্কৃতি রক্ষার প্রতি মনোভাব আরো দৃঢ় হয়।

. নির্বাচনে জয়লাভ

ইয়াহিয়া খান ক্ষমতা গ্রহণের পর ১৯৭০ সালে ডিসেম্বর জাতীয় পরিষদ ১৭ ডিসেম্বর প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনের ঘোষণা দেয়। আওয়ামী লীগ এককভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্টের নির্বাচনের তিক্ত অভিজ্ঞতার কারণে তারা সিদ্ধান্ত নেয়। সর্বোপরি -দফার জনপ্রিয়তা আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে জয়লাভের আশাবাদী করেছিল এবং যথার্থই তারা নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করেছিল।

১০. স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়

-দফা আন্দোলন বাঙালিকে যেভাবে জাগ্রত করেছিল, তার ফলে স্বাধীনতার সূর্য ছিনিয়ে আনা সম্ভব হয়েছিল। বাঙালি ১৯৬৬ সালের -দফা আন্দোলনের পর ১৯৬৮ সালে আগরতলা মামলার বিরুদ্ধে আন্দোলন করে, এরপর ১৯৬৯ সালের গণআন্দোলন, ১৯৭০ সালের নির্বাচনে জয়লাভের পরও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ক্ষমতা হস্তান্তর না করার কারণে স্বায়ত্তশাসন নয় শুরু হয় স্বাধীনতার সংগ্রাম। অতএব -দফা বাঙালির মনে যে স্বায়ত্তশাসনের আকাঙ্ক্ষা জাগিয়েছিল তাই বছরের মাথায় স্বাধীনতা সংগ্রামে পরিণত হয় এবং স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে।

সর্বোপরি বলা যায়, ছয় দফা দাবির গুরুত্ব ছিল সুদূরপ্রসারী অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। -দফা দাবি ছিল বাঙালির মুক্তির সনদ। -দফা দাবির কারণেই বাংলার স্বাধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়। যার ফলশ্রুতিতে ১৯৭১ সালে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে।

 

গণঅভ্যূত্থানের কারণ কি

ভূমিকা : ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান ছিল পাকিস্তানের ২৩ বছরের ইতিহাসে অন্যতম উল্লেখযোগ্য ঘটনা। ছাত্রসমাজের ১১ দফা এবং আওয়ামী লীগের দফার ভিত্তিতে শিক্ষার সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি, সংসদীয় গণতন্ত্র প্রবর্তন, জরুরি আইন প্রত্যাহার প্রভৃতি দাবিতে ছাত্র-জনতার আন্দোলন শুরু হয়

কিন্তু তৎকালীন পাকিস্তান সরকার ছাত্রসমাজের ১১ দফা এবং জনতার দফা দাবিকে রাষ্ট্রবিরোধী দাবি বলে ঘোষণা করে এবং আগরতলা ষড়যন্ত্রমূলক মামলা সাজিয়ে বাংলার অবিসংবাদিত নেতা শেখ মুজিবকে গ্রেফতার করে

এর ফলশ্রুতিতে সমগ্র বাংলাদেশে ছাত্র-জনতা আন্দোলনের রুদ্ররোষে ফেটে পড়ে এবং ধীরে ধীরে আন্দোলন গণঅভ্যুত্থানে পরিণত হয়

. আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা :
১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানের কারণ : ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানের কারণসমূহ নিম্নে আলোচনা করা হলো : বাঙালির স্বায়ত্তশাসনের দাবি দফাকে চিরতরে নস্যাৎ করার জন্য পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী যে চক্রান্ত করে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা ছিল তারই ফলশ্রুতি। মামলার প্রধান আসামি করা হয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে

মামলার লক্ষ্য ছিল বাঙালি স্বায়ত্তশাসনবাদীদের ভীতি প্রদর্শন করা এবং তাদের নেতা শেখ মুজিবকে রাষ্ট্রদ্রোহী হিসেবে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিয়ে স্বাধিকার আন্দোলনকে চিরতরে স্তব্ধ করা কিন্তু বাস্তবে এর ফল হয় বিপরীত

. পাক শাসকগোষ্ঠীর চক্রান্ত দমন নীতি : পাক শাসকগোষ্ঠীর পূর্ব পাকিস্তানিদের প্রতি চক্রান্ত দমননীতির ফলে পাকিস্তানের দুই অঞ্চলের মধ্যে বিরাজমান বিভেদ, অবিশ্বাস ঘৃণার মনোভাব আরো তীব্রতর হয় শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি বাংলার মানুষের সহানুভূতি শ্রদ্ধা বৃদ্ধি পায় এবং তিনি বাঙালিদের জাতীয় নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেন। ফলে তার আহ্বানে পাক শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে স্বতঃস্ফূর্ত বাঙালি জনতা গণঅভ্যুত্থানে ঝাঁপিয়ে পড়ে

. আইয়ুববিরোধী বিক্ষোভ : আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার ফলে পূর্ববাংলার জনগণ যখন চরম বিক্ষুব্ধ ঠিক সে সময়ে পশ্চিম পাকিস্তানেও আইয়ুববিরোধী বিক্ষোভ তীব্র হয়ে উঠে। ১৯৬৬ সালে মন্ত্রিসভা হতে পদত্যাগের পরেই জুলফিকার আলী ভুট্টো আইয়ুব খানের বিরুদ্ধে সমালোচনায় মুখর হয়ে উঠেন। ফলে পূর্ব পাকিস্তানে আইয়ুববিরোধী অভ্যুত্থান
নতুন মাত্রা পায়

. ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ গঠন : পূর্ব পাকিস্তানের ছাত্রসমাজ পশ্চিম পাকিস্তানে আইয়ুববিরোধী আন্দোলনকে স্বাগত জানায় এবং ছাত্র হত্যার প্রতিবাদে এবং দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার দাবিতে ধর্মঘট পালন করে। আইয়ুববিরোধী আন্দোলন অতি দ্রুতগতিতে পূর্ব পাকিস্তানের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে

ছাত্রলীগ ছাত্র ইউনিয়ন আন্দোলনের নেতৃত্ব দান করে। আন্দোলন পরিচালনার জন্য তৎকালীন ডাকসু সহসভাপতি তোফায়েল আহমেদের নেতৃত্বে এক ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ গঠিত হয়। ১৯৬৯ সালের জানুয়ারি সংগ্রাম পরিষদ ১১ দফা দাবি সংবলিত একটি কর্মসূচি ঘোষণা করে ফলে আইয়ুববিরোধী আন্দোলন আরো তীব্রতর হয়

. ১১ দফার প্রতিক্রিয়া : ১১ দফা দাবির মধ্যে শুধু দফাভিত্তিক আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসনের কথাই ছিল না, এতে ছাত্র-কৃষক-শ্রমিক সকল শ্রেণীর মানুষের শিক্ষা, বাসস্থান, চিকিৎসা ব্যক্তিস্বাধীনতার দাবিও অন্তর্ভুক্ত হয়। সেজন্য ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের আহ্বানে বাংলার আপামর জনতা আইয়ুববিরোধী আন্দোলনে ঐক্যবদ্ধভাবে সাড়া দেয়

. দমননীতি পরিণতি : আইয়ুব সরকার গণবিপ্লবকে দমন করার জন্য কোনো পন্থাই বাদ রাখেন নি কিন্তু নির্যাতনের মাত্রা যতই বাড়তে তাকে ছাত্র-জনতার জঙ্গি মনোভাব ততই দৃঢ়তর হয়। পল্টনের এক জনসভায় মওলানা ভাসানী পূর্ব পাকিস্তানের জন্য পূর্ণ আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসনের দাবি জানান। তিনি বলেন,

দাবির প্রতি উপেক্ষা প্রদর্শন করতে থাকলে পূর্ব পাকিস্তানবাসী বিচ্ছিন্ন হয়ে স্বাধীন পূর্ববাংলা গঠন করবে। এরপর থেকে সমগ্র পূর্ববাংলা হয়ে উঠল হরতাল, মিছিল আর বিক্ষোভের দেশ

পুলিশ সেনাবাহিনীর জুলুম, নির্যাতন গুলি চলল সমানভাবে। আসাদ, মতিউর, . জোহা, সার্জেন্ট জহুরুল একে একে প্রাণ দিলেন গণঅভ্যুত্থানের অগ্নিঝরা দিনগুলোতে

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায়, ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান ছিল পাকিস্তানের শাসনতান্ত্রিক ইতিহাসে একটি উল্লেখযোগ্য অধ্যায়। ১৯৬৮ সালের নভেম্বর থেকে ১৯৬৯ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত সমগ্র পাকিস্তানে জেনারেল আইয়ুব এর একনায়কতান্ত্রিক স্বেচ্ছাচারী শাসনের বিরুদ্ধে নজিরবিহীন গণঅভ্যুত্থান সংঘটিত হয়

১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানের ফলাফল গুরুত্ব

১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানের তাৎক্ষণিক ফলাফল ছিল আইয়ুবের পতন, সামরিক শাসন জারি এবং ইয়াহিয়ার ক্ষমতা দখল। তবে এর বাইরেও গণআন্দোলনের তাৎপর্য নিহিত রয়েছে। নিচে সেগুলো উল্লেখ করা হলো-

১। জাতীয়তাবাদের বিকাশ

১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান পাকিস্তানের রাজনীতিতে বিশেষ করে বাঙালি জাতীয়তাবাদের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। গণঅভ্যুত্থানের ফলে বাঙালি জাতীয়তাবাদ সুসংহত হয়ে উঠে। বাঙালি জনগণ ঐক্যবদ্ধ হয়।

২। স্বৈরাচারবিরোধী মানসিকতা সৃষ্টি

গণঅভ্যুত্থানের ফলে স্বৈরাচারবিরোধী মানসিকতা জনগণের মধ্যে গভীরভাবে প্রোথিত হয়। বাকস্বাধীনতা গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার জন্য জনগণ সর্বস্ব ত্যাগ স্বীকারের জন্যও মানসিকভাবে প্রস্তুত হয়।

৩। গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠান

গণঅভ্যুত্থানের কারণেই আইয়ুব সরকার জনগণের নিকট নতি স্বীকার করে ১৯৬৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে রাওয়ালপিন্ডিতে একটি সর্বদলীয় গোলটেবিল বৈঠক ডাকতে বাধ্য হন।

৪। এলিটদের মনোবল বিনষ্ট

নভেম্বর ১৯৬৮ থেকে মার্চ ৬৯ পর্যন্ত আইয়ুববিরোধী ব্যাপক গণঅভ্যুত্থানের কারণে পাকিস্তানের ক্ষমতাকেন্দ্রিক এলিটগোষ্ঠীর মনোবল ভেঙে যায়।

৫। আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার অবসান

আন্দোলনের মাধ্যমে ১৯৬৮ সালের ১৯ জুনের আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার অবসান ঘটে। পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ বুঝতে পারেন যে, তাদের আন্দোলনকে নস্যাৎ করার জন্যই পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকগণ ষড়যন্ত্র করে আগরতলা মামলা সাজিয়েছিলেন।

৬। রাজবন্দীদের মুক্তি

গণআন্দোলনের মাধ্যমে শেখ মুজিবসহ বিভিন্ন রাজবন্দী মুক্তি পান। তাছাড়া পূর্ব পাকিস্তানের নেতৃবৃন্দদের নিয়ে আইয়ুব খান গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করেন।

৭। আইয়ুব সরকারের অবসান

আন্দোলনের মাধ্যমে আইয়ুব সরকারের পতন ঘটে। অতঃপর সামরিক সরকার ইয়াহিয়া খান ক্ষমতায় আসেন এবং ১৯৬২ সালের সংবিধান বাতিল ঘোষণা করেন।

৮। ১৯৭০ সালের নির্বাচন

আন্দোলনের প্রেক্ষিতে পাকিস্তানের শাসনব্যবস্থার অবনতি ঘটে। তাই শাসনতান্ত্রিক ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটাতে ১৯৭০ সালের নির্বাচন সংঘটিত হয়।

৯। স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ সৃষ্টি

আন্দোলনের মাধ্যমে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের মধ্যে জাতীয়তাবোধ সৃষ্টি হয়। আর জন্যই তারা ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ নিয়ে স্বাধীনতা ছিনিয়ে আনেন। যার ফলশ্রুতিতে স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে পরিচিতি লাভ করে।

পরিশেষে বলা যায় যে, ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান ছিল পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পরবর্তীকালে সংগীঠত সর্ববৃহৎ আন্দোলন। আন্দোলনের ফলাফল অত্যন্ত সুদূরপ্রসারী। আন্দোলনের মাধ্যমে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের মধ্যে সংগ্রামী চেতনা জাগ্রত হয়।

 

evsjv‡`‡ki msweavb I ivóªxq g~jbxwZ

1972 mv‡ji g~j msweav‡bi ˆewkó¨ 1972 mv‡ji g~j msweavb MYcÖRvZš¿x evsjv‡`‡ki GKwU g~j `wjj| G msweavbwU DrK…ó Ges wewfbœ w`K w`‡q ˆewkó¨gwÊZ| Gi cÖavb ˆewk󨸇jv wbgœiƒcÑ

1. wjwLZ `wjj : g~j msweavb GKwU mywjwLZ `wjj| G‡Z 1wU cÖ¯Ívebv, 4wU Zdwmj, 11wU fvM Ges 153wU Aby‡”Q` Av‡Q|

2. `y®úwieZ©bxq : evsjv‡`‡ki msweavb `y®úwieZ©bxq| Z‡e ms‡kvab c×wZ Lye KwVb bq| msm‡`i `yB-Z…Zxqvsk †fv‡U msweav‡b cÖ‡qvRbxq ms‡kvabx cÖ¯Íve cvm Kiv‡bv hvq|

3. ivóª cwiPvjbvi g~jbxwZ : msweav‡bi wØZxq fv‡M RvZxqZvev`, MYZš¿, mgvRZš¿ I ag©wbi‡c¶Zv-GB PviwU g~jbxwZ‡K msweav‡bi g~j ¯Í¤¢ wn‡m‡e D‡jøL Kiv nq|

4. †gŠwjK AwaKvi : msweav‡bi RbM‡Yi †gŠwjK AwaKvi msi¶‡Yi e¨e¯’v Kiv n‡q‡Q| iv‡óªi bvMwiK‡`i e¨w³Z¡ weKv‡ki Rb¨ msweav‡b mvgvwRK, ivR‰bwZK, A_©‰bwZK I mvs¯‹…wZK AwaKvi wjwce× Kiv n‡q‡Q|

5. GK‡Kw›`ªK ivóª : msweav‡b evsjv‡`k‡K GKwU GK‡Kw›`ªK ivóª wn‡m‡e †NvlYv Kiv n‡q‡Q| †Kw›`ªq miKviB me ¶gZvi AwaKvix| †Kw›`ªq AvBbmfvB mve©‡fŠg AvBb cÖYqbKvix ms¯’v| 6. cÖRvZš¿ : evsjv‡`k GKwU cÖRvZvwš¿K ivóª| ivóªcwZ n‡eb ivóªcÖavb Ges Zuvi bv‡g iv‡óªi kvmb Kvh© cwiPvwjZ n‡e| ivóªcÖavb RvZxq msm‡`i m`m¨MY KZ…©K wbe©vwPZ n‡eb|

7. GK-K¶wewkó AvBbmfv : msweav‡b †`‡ki Rb¨ GKwU GK-K¶ wewkó AvBbmfvi weavb Kiv nq| 300 Rb wbe©vwPZ I 15 Rb msiw¶Z gwnjv Avmbmn †gvU 315 Rb m`m¨ wb‡q RvZxq msm` MwVZ n‡e| cieZ©x‡Z msiw¶Z gwnjv Avmb e„w× K‡i 30 Rb Ges PZz`©k ms‡kvabx‡Z e„w× K‡i Zv 45 Kivq eZ©gv‡b msm` m`m¨ msL¨v 345 Rb|

 8. msm`xq c×wZi miKvi : g~j msweav‡b msL¨vMwiô `‡ji cÖavb‡K cÖavbgš¿x K‡i Zvi gwš¿cwil`‡K †`‡ki cÖK…Z kvmK Kiv nq| gwš¿cwil` mKj Kv‡Ri Rb¨ msm‡`i wbKU Revew`wn Ki‡e|

 9. wePvi wefv‡Mi ¯^vaxbZv : msweav‡b evsjv‡`‡ki Rb¨ GKwU m‡e©v”P Av`vjZ MV‡bi e¨e¯’v Kiv nq| mycÖxg †KvU© n‡e evsjv‡`‡ki m‡e©v”P Av`vjZ| GB Av`vjZ msweav‡bi cÖvavb¨ wbwðZ Ki‡e Ges Zvi ¯^vaxbZv msi¶Y Ki‡e|

10. b¨vqcvj : miKvwi †h †Kvb KZ…©c‡¶i Kv‡Ri wbi‡c¶ Z`‡šÍi Rb¨ msweav‡b b¨vqcv‡ji c` m„wó Kiv n‡q‡Q| b¨vqcvj †h †Kvb wel‡q wbi‡c¶fv‡e Z`šÍ Ki‡Z cvi‡eb|

11. mvsweavwbK cÖvavb¨ : msweavb iv‡óªi m‡e©v”P AvBb| cÖRvZ‡š¿i mKj ¶gZvi gvwjK RbMY Ges RbM‡Yi c‡¶ Hme ¶gZvi cÖ‡qvM †Kej msweav‡bi Aax‡b I KZ…©‡Z¡ Kvh©Ki n‡e| 1972 mv‡ji g~j msweavb GKwU DËg msweavb| 1972 †_‡K eZ©gvb ch©šÍ 14 evi G msweavb ms‡kvab Kiv n‡q‡Q| eZ©gv‡b cÂg ms‡kvabx Av`vjZ KZ…©K evwZj nIqvq g~j msweavb A‡bKUvB c~‡e©i ˆewkó¨ wd‡i cv‡e|

ivóªxq g~jbxwZ fviZ Ges Avqvij¨v‡Êi b¨vq evsjv‡`‡ki msweav‡bI ivóª cwiPvjbvi Rb¨ KZ¸‡jv †gŠwjK bxwZ wba©viY Kiv n‡q‡Q| G bxwZ¸‡jv ivóª kvm‡bi g~jm~Î| miKv‡ii KZ©e¨ n‡jv ivóªxq Rxe‡bi me©‡¶‡Î G¸‡jv cÖ‡qvM Kiv| g~j msweav‡bi ÔwØZxq fv‡MÕ ivóª cwiPvjbvi g~jbxwZ wk‡ivbv‡g 8 †_‡K 25 Aby‡”Q` ch©šÍ g~jbxwZ¸‡jv wjwce× Kiv n‡q‡Q| G¸‡jv nj RvZxqZvev`, mgvRZš¿, MYZš¿ I ag©wbi‡c¶Zv| wb‡gœ g~jbxwZ¸‡jv Av‡jvPbv Kiv n‡jv :

K. RvZxqZvev` : g~j msweav‡bi 9bs Aby‡”Q‡` D‡jøL Kiv n‡q‡Q †h, ÒfvlvMZ I mvs¯‹…wZK H‡K¨i e܇b Ave× evOvwj RvwZ HK¨e× I msKíe× msMÖvg K‡i RvZxq ¯^vaxbZv hy‡×i gva¨‡g ¯^vaxbZv I mve©‡fŠgZ¡ AR©b K‡i‡Q| evOvwj RvwZi †mB HK¨ I msnwZ n‡e evOvwj RvZxqZvev‡`i wfwË|Ó evOvwj RvwZ Zv‡`i fvlv I ms¯‹…wZi Øviv HK¨e× GKwU Avjv`v Rb‡Mvôx| G ¯^vZš¿¨‡eva m¤ú‡K© m‡PZb evOvwj RvwZ HK¨e×fv‡e gyw³hy‡×i gva¨‡g we‡k¦i gvbwP‡Î ¯^vaxb I mve©‡fŠg ivóª M‡o Zz‡j‡Q| evOvwj RvZxqZvev` evOvwji c_cÖ`k©K I AMÖMwZi †cÖiYv|

L. mgvRZš¿ : g~j msweav‡bi 10 bs Aby‡”Q‡` ejv n‡q‡Q, Ògvby‡li Dci gvby‡li †kvl‡Yi Aemvb NwU‡q b¨vqvbyM mgvR e¨e¯’v cÖwZôvi D‡Ï‡k¨ †kvlYnxb mgvR Kv‡qg Kiv n‡e|Ó mgvRZš¿‡K ivóªxq g~jbxwZ wn‡m‡e MÖnY Kivi j¶¨ wQj g~jZ †gnbwZ gvbyl‡K mKj cÖKvi †kvlY n‡Z gyw³ †`qv| mgvRZš¿ cÖwZwôZ n‡e MYZvwš¿K c‡_| GRb¨ †kªYxmsMÖvg wKsev wecø‡ei cÖ‡qvRb †bB| AvB‡bi Av‡ivwcZ mxgvi g‡a¨ e¨w³MZ gvwjKvbv _vK‡e|

M. MYZš¿ : msweav‡bi 11 Aby‡”Q‡` ejv n‡q‡Q MYcÖRvZš¿x evsjv‡`k n‡e GKwU MYZvwš¿K ivóª| †hLv‡b †gŠwjK gvbevwaKvi, ¯^vaxbZvi wbðqZv Ges gvbemËvi gh©v`vi cÖwZ kª×v‡eva wbwðZ n‡e| ivóªxq mKj Kv‡R AskMÖnY wbwðZ KivB wQj Gi D‡Ïk¨| cÖvßeq¯‹‡`i me©Rbxb †fvUvwaKv‡ii gva¨‡g miKvi wbe©vwPZ n‡e| mgvRRxeb n‡Z me©cÖKvi ˆelg¨ `~ixf~Z K‡i bvMwiK‡`i †gŠwjK gvbweK AwaKvi Ges e¨w³ ¯^vaxbZvi wbðqZv weavb Kiv n‡e|

N. ag© wbi‡c¶Zv : msweav‡bi 12 bs Aby‡”Q‡` D‡jøL Kiv n‡q‡Q †h, Òivóª KZ…©K †Kvb ag©‡K ivR‰bwZK gh©v`v, ivR‰bwZK D‡Ï‡k¨ †Kvb a‡g©i e¨envi, †Kvb we‡kl ag© cvjbKvix e¨w³i ˆelg¨ ev Zvi Dci Drcxob Kiv n‡e bv|Ó gvbyl hv‡Z wbR wbR ag© cvjb Ki‡Z cv‡i Ges †KD hv‡Z Kv‡iv ag©-cvj‡b evav m„wó Ki‡Z bv cv‡i †mRb¨ ag©wbi‡c¶Zv‡K ivóªxq g~jbxwZ wn‡m‡e MÖnY Kiv nq| iv‡óªi `„wó‡Z mKj ag© mgvb| RbM‡Yi c~Y© agx©q ¯^vaxbZv _vK‡e| ag©, eY©, †MvÎ, bvix-cyi“l wbwe©‡k‡l mevB hv‡Z wbR wbR ag© cvjb, cÖPvi I Abykxjb Ki‡Z cv‡i| †m e¨vcv‡i iv‡óªi wbðqZv cÖ`v‡bi j‡¶ ag© wbi‡c¶Zv‡K msweav‡bi g~jbxwZ wn‡m‡e D‡jøL Kiv n‡q‡Q| ag©wbi‡c¶Zvi A_© ag©‡K A¯^xKvi Kiv bq, ag©nxbZvI bq| GQvovI evsjv‡`k msweav‡bi wØZxq Aby‡”Q‡` A_©‰bwZK bxwZ msµvšÍ 14, 17 I 18 Aby‡”Q‡` mvgvwRK bxwZ msµvšÍ 20, 22, 23 I 24 Aby‡”Q‡` AvBb I kvmb e¨e¯’v bxwZ msµvšÍ Ges 25 Aby‡”Q‡` ciivóªbxwZ msµvšÍ g~jbxwZ D‡jøL i‡q‡Q| ivóªxq gvwjKvbv bxwZ, K…lK kªwg‡Ki gyw³, †gŠwjK cÖ‡qvR‡bi e¨e¯’v, MÖvgxY Dbœqb I K…wl wece ø A‰eZwbK I eva¨Zvg~jK wk¶v, Rb¯^v¯’¨ I ˆbwZKZv, my‡hv‡Mi mgZv, bvMwi‡Ki AwaKvi I KZ©e¨ iƒ‡c Kg©, wePvi wefv‡Mi ¯^vaxbZv, RvZxq ms¯‹…wZ I RvZxq ¯§„wZ I wb`k©b msi¶Y Ges AvšÍR©vwZK bxwZ BZ¨vw` bxwZmg~n‡KI ivóª cwiPvjbvi g~jbxwZ wn‡m‡e msweav‡b D‡jøL i‡q‡Q|

No comments:

Post a Comment

সামাজীক বিজ্ঞান ইউনিট ২।। ১৮তম NTRCA স্কুল পর্যায় লিখিত প্রস্তুতি।

  ভাষা আন্দোলন বলতে কি বুঝ ? ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের গুরুত্ব আলোচনা কর। ভূমিকা :  ‘ ভাষা আন্দোলন ’ বাঙালির মুক্তির সংগ্রামী...