BIMSTEC (বিমসটেক) এর পূর্ণরূপ হলো Bay of Bengal Initiative for Multi-Sectoral Technical and Economic Cooperation — বাংলায়: বহুপাক্ষিক প্রযুক্তি ও অর্থনৈতিক সহযোগিতার বঙ্গোপসাগরীয় উদ্যোগ।
এটি একটি আঞ্চলিক সংস্থা, যা দক্ষিণ এশিয়া এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে গঠিত হয়েছে।
BIMSTEC-এর সদস্য রাষ্ট্রসমূহ:
১. বাংলাদেশ
২. ভারত
৩. মিয়ানমার
৪. শ্রীলঙ্কা
৫. থাইল্যান্ড
৬. নেপাল
৭. ভুটান
গঠনের সাল:
BIMSTEC গঠিত হয় ১৯৯৭ সালের ৬ জুন।
উদ্দেশ্য:
-
অর্থনৈতিক উন্নয়ন
-
দারিদ্র্য দূরীকরণ
-
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে সহযোগিতা
-
পরিবহন ও যোগাযোগের উন্নয়ন
-
জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলা
-
নিরাপত্তা ও সন্ত্রাসবিরোধী সহযোগিতা
মূল ক্ষেত্র (Priority Sectors):
BIMSTEC মোট ১৪টি খাতে কাজ করে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:
-
বাণিজ্য ও বিনিয়োগ
-
পরিবহন ও যোগাযোগ
-
শক্তি
-
কৃষি
-
জলবায়ু পরিবর্তন
-
সন্ত্রাসবাদ দমন
-
পর্যটন
BIMSTEC-এর প্রধান কার্যালয়:
ঢাকা, বাংলাদেশ।
গুরুত্ব:
-
SAARC-এর কার্যকারিতা কমে যাওয়ার ফলে BIMSTEC আজ দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সহযোগিতার একটি গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্মে পরিণত হয়েছে।
-
ভারত ও বাংলাদেশ উভয়ের জন্যই এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ফোরাম।BIMSTEC-এর সাম্প্রতিক সম্মেলন, চ্যালেঞ্জ বা ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়েও জানতে পারেন।
BIMSTEC (বিমসটেক) সম্প্রতি বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সম্মেলন, চ্যালেঞ্জ এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার মুখোমুখি হয়েছে। নিচে সেগুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো:
সাম্প্রতিক সম্মেলন
৬ষ্ঠ BIMSTEC শীর্ষ সম্মেলন: ২০২৫ সালের এপ্রিল মাসে ব্যাংককে অনুষ্ঠিত এই সম্মেলনে সদস্য দেশগুলোর নেতারা বাণিজ্য ও পরিবহন সহযোগিতা বৃদ্ধির পাশাপাশি প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় সম্মিলিত প্রচেষ্টা জোরদার করার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন। সম্মেলনে থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্ন শিনাওয়াত্রা সভাপতিত্ব করেন এবং মিয়ানমারের সামরিক নেতা মিন অং হ্লাইং-এর উপস্থিতি বিতর্কের সৃষ্টি করে। সম্মেলনে BIMSTEC-এর সভাপতিত্ব থাইল্যান্ড থেকে বাংলাদেশে হস্তান্তর করা হয়।
চ্যালেঞ্জ
BIMSTEC-এর অগ্রগতিতে কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে:
-
রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতির অভাব: সদস্য দেশগুলোর মধ্যে রাজনৈতিক সদিচ্ছার ঘাটতি BIMSTEC-এর কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করছে।
-
প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতা: সচিবালয়ের সীমিত ক্ষমতা এবং পর্যাপ্ত অর্থায়নের অভাব সংগঠনের কার্যকারিতাকে প্রভাবিত করছে।
-
বাণিজ্য চুক্তির বিলম্ব: ২০০৪ সালে স্বাক্ষরিত মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি এখনও সম্পূর্ণরূপে বাস্তবায়িত হয়নি, যা আঞ্চলিক বাণিজ্য বৃদ্ধিকে বাধাগ্রস্ত করছে।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
BIMSTEC-এর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাগুলো নিম্নরূপ:
-
সংস্কার প্রস্তাবনা: আগামী শীর্ষ সম্মেলনে সংগঠনের কার্যকারিতা বৃদ্ধির জন্য সংস্কার প্রস্তাবনা উপস্থাপন করা হবে। The Financial Express
-
Bangkok Vision 2030: এই দৃষ্টিভঙ্গি নথি BIMSTEC-এর ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশনা প্রদান করবে এবং আঞ্চলিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে কাজ করবে।
-
মারিটাইম পরিবহন সহযোগিতা: সদস্য দেশগুলোর মধ্যে সামুদ্রিক পরিবহন সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য একটি চুক্তি স্বাক্ষরের পরিকল্পনা রয়েছে, যা আঞ্চলিক সংযোগ উন্নত করবে।
BIMSTEC-এর এই উদ্যোগগুলো সফলভাবে বাস্তবায়িত হলে, আঞ্চলিক সহযোগিতা ও উন্নয়নে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে।বর্তমান সভাপতি
BIMSTEC-এর বর্তমান সভাপতি হলো বাংলাদেশ। ২০২৫ সালের ৪ এপ্রিল ব্যাংককে অনুষ্ঠিত ৬ষ্ঠ BIMSTEC শীর্ষ সম্মেলনে থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্ন শিনাওয়াত্রা বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনুসের কাছে সভাপতিত্ব হস্তান্তর করেন। বাংলাদেশ আগামী দুই বছর এই দায়িত্ব পালন করবে।
No comments:
Post a Comment